1st National Conference on Brain Engineering

ব্রেইন ইঞ্জিনিয়ারিং; আমরা কেন আপনাদের জানাতে চাই?
সঙ্গত কারণে আসুন কিছু অসঙ্গত প্রশ্ন করা যাক। আমেরিকাতে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বেশি ব্রেইন (Brain) পাওয়া যাবে না বাংলাদেশে বেশী ব্রেইন পাওয়া যাবে? আমেরিকার ব্রেইন বেশি উর্বর না বাংলাদেশি ব্রেন? আচ্ছা ম্যাঙ্গো রিসার্চ ইন্সটিটিউট কোথায় স্থাপিত হবে? রাজশাহীর কানসাটে না ঢাকাতে? উত্তর যদি হয় রাজশাহী তাহলে পরবর্তী সঙ্গত প্রশ্ন, কেন? একথা আমরা জানি যে আমের প্রচার, প্রসার এবং শ্রীবৃদ্ধি এর সবকিছুই দরকার রাজশাহীর কানসাটে, ঢাকাতে নয়। দ্বিতীয় প্রশ্ন, আচ্ছা ইক্ষু গবেষণা ইন্সটিটিউট কোথায় স্থাপন হবে এবং কেন হবে? উত্তর সোজা। যেখানে ইক্ষু বেশি জন্মে সেখানে। কারন? ইক্ষু প্রক্রিয়াজাত করণের সহজতম উপায় এবং ইক্ষুর সর্বোত্তম ব্যাবহার তাদেরই জানা দরকার যেখানে ইক্ষু বেশী জন্মে। খুব সহজ যুক্তি, যেখানে প্রচুর ইক্ষু পাওয়া যাবে গবেষণাও সেখানেই করতে হবে।
আমরা যে কোন কিছুর শ্রীবৃদ্ধি করার জন্য সেই বিষয়ে গবেষণা করাকে অত্যন্ত জরুরী বলে মনেকরি। আর উন্নত ফল (Outcome) পেতে গেলে কৌশল প্রয়োগ করাও জরুরী। আমরা তাকে প্রকৌশল বিদ্যা বলি। বাংলাদেশ হলো সেই দেশ যেখানে ১৬০ মিলিয়ন ব্রেইন (Brain) আছে যার মধ্যে প্রায় ১০০ মিলিয়ন তরুন এবং শিশু। সঙ্গত কারণেই ১৬০ মিলিয়ন ব্রেইনকে সর্বচ্চো ব্যাবহারের জন্য আমাদের কৌশল বা ব্রেইনের প্রকৌশল (Brain Engineering) শিক্ষা এবং গবেষণা অত্যন্ত জরুরী। এর সর্বোত্তম ব্যাবহারের মধ্যে আমাদের জাতীয় উন্নতি নিহিত।
তাহলে আমাদের দেখা দরকার এই ব্রেইন (Brain) কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আর তার চেয়েও বড় প্রশ্ন এই যে “গুরুত্বপূর্ণ ব্রেইনকে” কিভাবে বাণিজ্যে রূপান্তর করা যাবে? আর এর ব্যাবহারই বা কী হতে পারে?
যে কোন শিল্পের বিকাশ আর উন্নয়নে মানব সম্পদ অত্যন্ত জরুরী। আর মানব “সম্পদ” হয় তার ব্রেইনের (Brain) জন্য। তাই ব্রেইনের সর্বোত্তম ব্যাবহারই নিশ্চিত করতে পারে মানব সম্পদের সর্বোত্তম ব্যাবহার। আর বাণিজ্যতো তার সকল ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কী করে ব্রেইনকে বাণিজ্যে রূপান্তর করা যাবে তাও জানার জন্য আমাদের গবেষণার মুখাপেক্ষী হতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে যে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ এবং দেশ গঠনের কথা আমরা চিন্তা করছি তা করতে গেলে ব্রেইনের সম্যক জ্ঞান আমাদের দরকার হবে। ব্রেইনের সর্বচ্চো ব্যাবহার নিশ্চিত করতে গেলেও আমাদের এই ব্রেইনের সম্যক জানতে হবে। তার কাজের ধারা, কর্ম পদ্ধতি এবং প্রকৃতিও জানতে হবে। তবেই কেবল আমরা তার সর্বচ্চো ব্যাবহারের কথা ভাবতে পারবো।
একথা মানতে দ্বিধা নেই যে, আজকের “কম্পিউটার সিস্টেম” তার ক্রমাগত শ্রীবৃদ্ধিতে একসময় এরকম হতেই পারে যে মানুষের ব্রেইন আর কম্পিউটারের প্রসেসরে যোগাযোগ স্থাপন করা গেলো আর বর্তমানের কম্পিউটারের ইনপুট আর আউটপুট ডিভাইস পরিবর্তিত হয়ে এক ভিন্ন রূপে দেখা দিল। যদি তাই হয় তাহলে ভাবুন এমন এক সময়ের কথা যখন ব্যাংকের এটিএমের সামনে গিয়ে পাসওয়ার্ড মনে করার দরকার হবে না। ব্যাংকের এটিএম এর বদলে রোবট ব্যাংকের গ্রাহককে চিনে ফেলবে আর জিজ্ঞেস করবে কত টাকা দরকার, কিভাবে দরকার, আর কখন দরকার? নিশ্চিত ভাবেই সে গ্রাহককে চিনেছে তাহলে আর অথেন্টিকেশনের বাকী থাকলো কী। যে মানুষটাকে আমরা অফিসে নিয়োগ করতে চাই তাকে নির্বাচনের জন্য তার ব্রেইনকে পর্যালোচনা করলেই নির্বাচনের কাজটি হয়ে যাবে। কর্মক্ষেত্রে যে মানুষটিকে দিয়ে আপনি কাজ করাতে পারছেন না তার নেগেটিভ দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য। সেই মানুষটির ব্রেইনে কিছু কৌশল প্রয়োগ করার কারণে সে-ই হতে পারে অফিসের সবচেয়ে কর্মঠ কর্মী। যে অটিস্টিক শিশুকে সমাজ আজকে তার বোঝা মনে করছে কে জানে ব্রেইনের কিছু কৌশল প্রয়োগ করায় তার ব্রেনই হয়ত হবে সবচেয়ে দামী “কিছু” উৎপাদনের জায়গা।
ধরুন আমরা কাউকে ক্রিয়েটিভ আর ইনোভেটিভ বানাতে চাই। ব্রেইনের কোন এক জায়গায় হয়ত কৌশল প্রয়োগ করে কাজটি করা যেতে পারে। অথবা ধরুন আমরা কাউকে উদ্যোক্তা বানাতে চাই। ব্রেইনেই হয়ত কৌশল প্রয়োগ করে এটা করা সম্ভব হবে যদি আমরা ব্রেনকে যথাযথ ভাবে “মেপিং” করতে পারতাম আর ব্রেইনের অনেক কিছু জানতে পারতাম।
সারাবিশ্ব বহু আগে থেকেই ব্রেইনের গবেষণা শুরু করেছে। তারমধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র, যারা ইতোমধ্যে BRAIN নামক এক প্রকল্প (প্রোজেক্ট) নিয়ে ১০ বছরের মহা পরিকল্পনায় ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে ব্রেইনকে জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১.০৩ বিলিয়ন ইউরো খরচ করে “হিউম্যান ব্রেইন প্রোজেক্ট ইন ইউরোপ” বাস্তবায়ন করছে। সুইজারল্যান্ড ১ বিলিয়ন ইউরো খরচ করে “ব্লু-ব্রেইন প্রোজেক্ট” বাস্তবায়ন করছে। জাপান, গণ-চীন, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, হংকং থেকে শুরু করে তাবৎ বিশ্ব যার যার সামর্থ আর প্রয়োজন অনুযায়ী “ব্রেইন” প্রোজেক্ট বাস্তবায়ন করে চলেছে। সকল দেশের মূল উদ্দেশ্য এক এবং অভিন্ন, সর্বচ্চো মাত্রায় ব্রেইনকে জানা এবং তার সর্বচ্চো ব্যাবহার কী হতে পারে তা খুঁজে বের করা।
এসকল গবেষণার ফলশ্রুতিতে সারা পৃথিবীর কম্পিউটার ব্যাবস্থায় এক আমূল পরিবর্তন ঘটবে যার ফলাফল হবে Bio Money, Bio Banking, Bio Education, Bio Health, Bio Management এর মত বর্তমান ভাবনা সীমার বাইরের বিষয়। মহান সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত সর্বচ্চো মানব ঘণত্বের দেশ বাংলাদেশ যার প্রতি ১ ঘন কিমি জায়গায় রয়েছে ১০৯৫টি ব্রেইন। এর সর্বচ্চো নিশ্চিত ব্যাবহার আমাদের দিতে পারে ২০৪১ সালের জ্ঞান ভিত্তিক এক সমাজ ব্যাবস্থার লক্ষ্য পূরণের নিশ্চয়তা যেখানে আমরা “মানব হাতের” (কায়িক শ্রম) বদলে রপ্তানি করতে পারবো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ। যখন খবরের পাতা জুড়ে হাতের ব্যাবহারের বদলে আমরা দেখবো “বুদ্ধি” ব্যাবহারের খবর। হাতের ব্যাবহারের খবর আমাদের আর তখন আতঙ্কিত করবে না। আমরা দেখবো হাতের বদলে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ রপ্তানির খবর।





Seminar on Brain Engineering at IUB

Seminar on Brain Engineering at UAP

Seminar on Brain Engineering at BRAC

Seminar on Brain Engineering at AIUB





Seminar on Brain Engineering at IUBAT

Seminar on Brain Engineering at Northern Uiversity

Seminar on Brain Engineering at ULAB
